• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘কথা রাখেননি’ মেয়র আতিক


জাহিদ রাকিব
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৭:৫৫ পিএম
‘কথা রাখেননি’ মেয়র আতিক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের  (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত সংবাদকর্মী আহসান কবির খানের অসহায় পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। কিন্তু প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কবিরের পরিবারকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করেনি ডিএনসিসি। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্ত্রী নাদিরা পারভিন রেখা। তার অভিযোগ, কথা দিয়ে কথা রাখেনি মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এদিকে দুর্ঘটনার পর নিহত আহসান কবিরের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠানো হয়েছিল সেদিন।

সোমবার নিহত কবিরের স্ত্রী নাদিরা পারভিন (৪০) সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ডিএনসিসির ময়লার গাড়ির ধাক্কায়  আমার স্বামী আহসান কবির খান নিহত হয়। দুর্ঘটনার পর গত  দুই মাসে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একবারও তাদের খোঁজ নেওয়া হয়নি এবং সহায়তা হিসেবে একটি পয়সাও দেওয়া হয়নি।”

এ ঘটনায় নাদিরা পারভিন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন। কবির একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার বিভাগে চাকরি ও পাশাপাশি করতেন ব্যবসা।

এদিকে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির হঠাৎ এমন মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে পরিবারটি। আহসান কবির ও নাদিরা পারভিনের সংসারে আছে এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে সাদমান শাহারিয়ার কাইফ (১৫) রাজধানীর ফয়জুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউটে দশম শ্রেণিতে পড়ে। আর মেয়ে সাফরিন কবির দিয়া (১০) একই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে ।

নাদিরা পারভিন আরো বলেন, ‘‘মেয়র সাহেব যেভাবে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে আমরা ভেবেছি তিনি আমাদের দায়িত্ব নিবেন। কিন্তু গত দুই মাসে একটি বারও খোঁজ নেননি। স্বামীর এমন মৃত্যুর পর দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।’’

দুর্ঘটনার পর ডিএনসিসি মেয়র আতিক নিহতের স্ত্রী নাদিরা পারভিনকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আপনি আমার ছোট বোন, আপনার পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিলাম। পরিবারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।’’

এ বিষয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দুর্ঘটনার পর ওই পরিবারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। ছেলেমেয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশন নেবে বলেছি। কথা দিয়েছি, অবশ্যই আমরা দায়িত্ব নেবো।’’

জানা গেছে, নিহত হওয়ার দুই মাস পর কবিরেরর পরিবারকে আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রোববার মেয়র আতিকুল ইসলামের নির্দেশে আঞ্চলিক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী ও স্থানীয় কাউন্সিলর তৈমুর রেজা খোকন রাজধানীর মগবাজারে সোনালীবাগে কবিরের বাসায় যান। তারা পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে সহায়তার আশ্বাস দেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কবিরের দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ও পরিবারকে প্রয়োজনমতো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা ডিএনসিসি মেয়রের পক্ষ থেকে এত দিন কোনো সহায়তা পায়নি। সম্প্রতি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়। এবার তারা সহায়তা পাবে বলে আশা করছে।

গত ২৫ নভেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের উল্টো দিকে ডিএনসিসি ময়লার গাড়ির চাপায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী আহসান কবির খান। ঝালকাঠির গ্রামের বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ মা-বাবা ও ঢাকায় স্ত্রী-সন্তানদের খরচ একাই বহন করতেন কবির।

Link copied!